পর্বতারোহণে ছুটে চলেছেন রাজশাহীর ছেলে শাহাদাত

পর্বতারোহণে ছুটে চলেছেন রাজশাহীর ছেলে শাহাদাত

নিজস্ব প্রতিবেদক : তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বকে জানতে এবং নাগরিক দাবি-দাওয়া নিয়ে নিরন্তর ছুটে চলেছেন সম্ভবনাময় এক তরুণ পর্বতারোহী শাহাদাত হোসেন সরকার। শুধু পর্বত আরোহন নয়, বন্ধুদের নিয়ে পায়ে হেঁটে মোট চার বারে ৫১ দিনে শেষ করেছেন বাংলাদেশ পরিক্রমা।

এ সময় তারা হেঁটেছেন ২ হাজার ৩০০ কিলোমিটার। নদী রক্ষা আর মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করতে এ পরিক্রমা করেন তারা। প্রথম যাত্রা শুরু করেন ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে। ‘বাঁচলে নদী, বাঁচবে দেশ নদীমাতৃক বাংলাদেশ’ স্লোগানকে সামনে রেখে তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ ২১ দিনে। সিলেটের তামাবিল থেকে যাত্রা শুরুর পর সাতক্ষীরার ভোমরায় পৌঁছান ১২ দিনে। দেশের পশ্চিম সীমানা মুজিবনগর থেকে আখাউড়া যেতে সময় নেন ৮ দিন। ২০১৯ সালে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থেকে কুয়াকাটা যান ১০ দিনে ঘুরে এসেছেন।

তবে মূল নেশা পর্বত আরোহণের। বেইজ ক্যাম্প এ্যাডভেঞ্চার গ্রান্ট-২০১৯’র চ্যাম্পিয়ন তিনি। প্রতিষ্ঠানটির ব্যান্ড এম্বাসিডর হিসেবে কাজ করবেন এক বছর। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি তার জন্মস্থান রাজশাহীতে তরুণদের ভ্রমণ, পবর্ত আরোহণের মতো এ্যাডভেঞ্চারের সাথে পরিচিত করতে চান। দ্যা বেইজ ক্যাম্প বাংলাদেশের সহযোগিতায় তরুণদের পবর্ত আরোহণের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

শাহাদাত হোসেন সরকার বর্তমানে এডভান্স মাউন্টেনিয়ারিং কোর্সে অংশ নিতে ভারতের উত্তরাখান্ডে অবস্থিত নেহরু ইন্সটিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং (এনআইএম) এ অবস্থান করছেন। বেইজ ক্যাম্প বাংলাদেশের সহযোগিতায় পবর্ত আরোহণ বিষয়ে মাসব্যাপী প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন। এ সময় ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে এনআইএম ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অংশ ও প্রশিক্ষণের বিভিন্ন অংশ তুলে ধরবেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর তিনি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। দেশে ফিরে আসবেন অক্টোবর মাসের শেষের দিকে।

২০১৩ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পাহাড়চূড়া তাজিংডং বা সাকা হাফং-এ আরোহণ করেন। যার উচ্চতা ১০৫৬ মিটার বা ৩৪৬৫ ফুট। ২০১৭ সালের ভারতের মাউন্ড কানামো পাহাড়ে (৫৯৭৪ মিটার) আরোহণ করেন। যার উচ্চতা তাজিংডংয়ের প্রায় ৫ গুন। এছাড়া ধ্রপদীকা ডান্ডা-২ আরোহণ করেছেন। যার উচ্চতা ৫৬৭০ মিটার। তরুণদের এ্যাডভেঞ্চারমুখী করতে এবং মাদকমুক্ত করতে এই অভিযানের সাথে তরুণদের সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সম্ভবনাময় এই তরুণ পর্বতারোহী।

এ প্রসঙ্গে অরাজনৈতিক সংগঠন বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ চাই’র আহ্বায়ক ও রাজশাহী প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক আসলাম-উদ-দৌলা বলেন, বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি, মাদক ও জঙ্গীবাদ। এসবের বিষবাষ্পমুক্ত আগামীর বাংলাদেশ গড়তে যুবশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ এই তরুণ মাঠে নামলে যে কোনো কঠিন থেকে কঠিনতর সংকট কাটিয়ে উঠা সম্ভব। শান্তির শহর, শিক্ষার নগরী রাজশাহীতে তরুণরা আজ এ্যাডভেঞ্চারমূলক স্পোর্টসের সাথে যুক্ত হচ্ছেন। ক’দিন আগে মাদকবিরোধী ও পরিবেশ বাঁচানোর ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে সাইকেলে করে রাজশাহী থেকে যাত্রা শুরু করে কাশ্মীরের ওয়াঘা সীমান্ত ঘুরে এসেছেন রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম রবিন। বর্তমানে ভারতে প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছেন এই শহরের সন্তান পর্বতারোহী শাহাদাত হোসেন সরকার। দেশে ফিরে তিনি দ্যা বেইজ ক্যাম্প বাংলাদেশের সহযোগিতা নিয়ে তরুণদের এ্যাডভেঞ্চারমুখী করতে প্রশিক্ষণের আয়োজন করার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। এসকল উদ্যোগ দুর্নীতি, মাদক ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কার্যকর শক্তিশালী চপেটাঘাত হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

মতিহার বার্তা ডট কম – ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply